ভারতের ভোটার তালিকার নিজের নাম রাখতে এবার দেশের সকল নাগরিককে মানতে হবে নতুন নিয়ম l এই নিয়ম অনুসারে শুধু আবেদনকারীর জন্ম প্রমাণপত্র নয়, সাথে বাবা মায়ের জন্ম প্রমাণপত্র লাগবে। মানে ভোটার তালিকায় নাম রাখতে হলে আপনার কাছে কিছু নির্দিষ্ট ডকুমেন্টস থাকতে হবে, সেগুলি না থাকলেই নাম বাতিল হবে। কী কী ডকুমেন্টস জোগাড় করতে হবে, এই নিয়মের ফলে আপনার কি সমস্যা হতে পারে এবং সমাধান কি চলুন জেনে নিই।
নতুন নিয়ম কী বলছে?
এই নতুন নিয়ম অনুসারে ১ জুলাই ১৯৮৭ সালের আগে যাদের জন্ম তাদের দিতে হবে শুধু নিজের জন্ম ও জন্মস্থানের প্রমাণপত্র। মানে তারা যে ভারতীয় এবং ভারতেই তাদের জন্ম তার প্রমাণপত্র দিতে হবে তবেই ভোটার তালিকায় নাম থাকবে।
যাঁদের জন্ম ১ জুলাই ১৯৮৭ থেকে ২ ডিসেম্বর ২০০৪-এর মধ্যে, তাদের ভোটার তালিকায় নাম রাখতে হলে নিজের জন্ম ও জন্মস্থানের প্রমাণপত্র এর সাথে বাবা মায়ের জন্ম প্রমাণপত্রও দিতে হবে।
অনলাইনের মাধ্যমে অ্যাপ্লিকেশন জমা দেওয়া যাবে।তারপর নির্বাচন কমিশনের কর্মচারী বাড়ি বাড়ি গিয়ে সমস্ত ডকুমেন্টস ভেরিফিকেশন করবেন।
এই নিয়মটি বর্তমানে শুধু বিহারে কার্যকর হয়েছে। কিন্তু নির্বাচন কমিশনের সূত্রে খবর, এই নিয়মটি খুব শীঘ্রই দেশের সমস্ত রাজ্যে কার্যকর হবে।
এই নিয়ম নিয়ে বিতর্ক কেনো?
বিহারের পর সমস্ত রাজ্য এই নিয়ম কার্যকর হবে শুনে পশ্চিমবঙ্গে এই নিয়ে বিতর্কের শেষ নেই। বিরোধী দল এই নিয়মের বিরোধিতা শুরু করে দিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই নিয়মের প্রতিবাদ করে বলেছেন, “এটা আসলে বাংলার ভোটারদের নাম কাটার চক্রান্ত।” তার মতে ভারতের বহু গ্রামীণ ও প্রান্তিক পরিবারে এখনো বাবা-মায়ের জন্ম সংক্রান্ত কাগজপত্র নেই। হকার, দিনমজুর, পরিযায়ী শ্রমিকদের কাছে এসব নথি সংগ্রহ করা কঠিন। তাহলে কি তারা ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হবেন?
কী প্রভাব পড়তে পারে সাধারণ মানুষের ওপর?
এই নিয়মের কিছু ভালো দিক ও কিছু খারাপ দিকও রয়েছে। এর ভালো দিকগুলি হল যে এর ভোটার লিস্ট আরও সঠিক এবং আপডেটেড হবে, সমস্ত ভুয়ো নাম তালিকা থেকে বাদ পড়ে যাবে। যারা প্রকৃত ভারতীয় তাদেরই নাম থাকবে তালিকায়।
এর খারাপ দিক হল যে বহু প্রকৃত ভারতীয় যারা দরিদ্র তাদের এইসব নথিপত্র জোগাড় করা কঠিন, ফলে তারা যোগ্য হওয়া সত্ত্বেও তাদের নাম তালিকা থেকে বাদ পড়ে যাবে।
আপনি কি করবেন?
নির্বাচন কমিশনের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে ভোটার তালিকায় আপনার নাম রয়েছে কিনা চেক করুন।
আপনার বা আপনার পরিবারের কোনো সদস্যের জন্ম যদি ১ জুলাই ১৯৮৭ সালের আগে হয়ে থাকে তবে তার যেকোনো একটি জন্ম প্রমাণপত্র রেডি রাখুন।
যাদের জন্ম ১ জুলাই ১৯৮৭ থেকে ২ ডিসেম্বর ২০০৪ এর মধ্যে তারা নিজের জন্ম সার্টিফিকেট এর পাশাপাশি নিজের বাবা মায়ের যেকোনো একটি প্রমাণপত্র(যেমন ভোটার কার্ড, আধার, প্যান কার্ড) খুঁজে রাখুন।
যদি কোনো কাগজ না থাকে, বিকল্প ব্যবস্থা বা শপথনামা দিয়ে আবেদন সম্ভব কি না তা বুথ লেভেল অফিসার (BLO) বা নির্বাচন অফিসে গিয়ে বিস্তারিত জানুন।
আমি Scheme Bangla Youtube চ্যানেল এর মালিক। আমি এই ওয়েবসাইটে বিভিন্ন সরকারি প্রকল্প এবং সরকারি খবর নিয়ে লিখে থাকি।